আদমদীঘিতে রেললাইনের উপর পশুহাট, অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর রেলওয়ে স্টেশনে রেললাইনের উপর বসানো হয়েছে কোরবানির পশু-হাট। এতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেললাইনের উপর হাট বাজার না বসানোর জন্য উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে পত্র দিলেও তা কার্যকর হচ্ছেনা। এদিকে কোরবানিকে সামনে রেখে অধিকাংশ গো-হাট গুলোতে সরকারি রেট উপেক্ষা করে গবাদিপশুর অতিরিক্ত হারে খাজনা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে আদমদীঘি উপজেলায় আদমদীঘি সদর, সান্তাহার রাধাকান্ত হাট, নসরতপুর, কুন্দগ্রাম, ছাতিয়ানগ্রাম, সাওইলসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কোরবানীর পশুর হাট বসে। প্রতি হাটেই বিপুল পরিমান কোরবানীর গরু ও ছাগলের আমদানি ও বিক্রি শুরু হয়েছে।

বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাট ইজারাদারগণ সরকারি বিধি উপেক্ষা করে গোবাদিপশু ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে খাজনা আদায় করছেন। সরকারি নিয়মানুযায়ী প্রতিটি হাট বাজারে টোল আদায়ের তালিকা টাঙ্গিয়ে দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। সরকারি ভাবে গরু বড় আকারের ৫০ হাজার টাকার দামের বেশি হলে ৫০০শ টাকা, ছোট আকার গরু ৫০ হাজার টাকা দামের কম হলে ৪০০, ছাগল ভেড়া ১৫০ টাকা টোল আদায় নির্ধারণ থাকলেও অত্র উপজেলার নসরতপুর হাটসহ কিছু কিছু কোরবানির হাটে কোরবানির গরু ৬০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ৩০০ টাকা হারে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছেন সংশ্লিষ্ট ইজারাদার। তারা বিক্রেতার নিকট থেকেও পশু প্রতি নূন্যতম ১০০ টাকা করে খাজনা আদায় করছেন। পশু বিক্রি রশিদে গরু বা ছাগলের মূল্য ও আকৃতি লেখা হলেও খাজনা আদায়ের অর্থের পরিমান লেখা হচ্ছে না।

এদিকে সরকারি নীতি উপেক্ষা করে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার নসরতপুর রেললাইনের উপর ও প্লাটফরম দখল করে গো-হাট বসানো হয়েছে। ফলে ট্রেন যাতায়াতে মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ১ জুলাই শুক্রবার নসরতপুর পশুহাটে দেখা গেছে রেললাইন ও প্লাটফরম দখল করে হাট বসানো হয়েছে। এতে ট্রেন চলাচল ও হাটুরিয়ারা ঝুঁকিতে কেনাবেচা করছে। যে কোন মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। কোরবানির গরু ক্রেতা আহাদ আলী জানায়, তিনি ৮২ হাজার টাকার একটি গরু কিনেছেন তার নিকট থেকে নেয়া হয়ে ৬০০টাকা। বিক্রেতা রমজান আলী বলেন, তার নিকট থেকে ১০০ টাকা খাজনা নেয়া হয়েছে। রশিদ দেয়া হয়নি। নসরতপুর স্টেশনে সাময়িক দায়িত্বে থাকা ওয়েম্যান প্রধান মেট সাইফুল ইসলাম বলেন, রেললাইলে ও স্টেশন প্লাটফরমে গোহাট বসানো নিশেষ করে রেলওয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দেয়া পত্র উপজেলা নির্বাহি অফিসার মহোদয়কে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নসরতপুর হাট ইজারাদার আর.কে এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার শ্রী কানাইলাল জয়সোয়াল ময়না জানান, আগে যে জায়গায় হাট ছিল ওই জায়গায় হাট চলছে। খাজনা বেশি নেয়ার ব্যাপারে তিনি কোন উত্তর দেননি।

আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহি অফিসার শ্রাবণী রায় জানান, হাটের নির্ধারিত জায়গা ছাড়া রেললাইন স্টেশন কিংবা অন্য জায়গা হাট বসানো কিংবা অতিরিক্ত হারে খাজনা নেয়ার যাবে না। সরজমিনে তদন্ত করে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ