ঢাকার সঙ্গে রেলপথে যুক্ত পদ্মা সেতু

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণে পদ্মা সেতু এগিয়ে গেল আরও এক ধাপ। এবার রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হলো পদ্মা সেতু।

শনিবার (১৯ আগস্ট) প্রথমবারের মতো পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ পাড়ি দিয়ে পরীক্ষামূলক রেলট্র্যাক কার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে সেতু পাড়ি দিয়ে পদ্মার ওপারে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যায়।

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশ পাড়ি দিয়ে পরীক্ষামূলক রেলট্র্যাক কার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পৌঁছায় বেলা সোয়া ১১টায়। মাওয়া স্টেশনে পৌঁছে এক ঘণ্টার যাত্রা বিরতিতে সংশ্লিষ্টরা বৈঠক করেন।

পরে ট্র্যাক কারটি দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সেতু অতিক্রম করে সোয়া ১টার দিকে ভাঙ্গায় পৌঁছায়। সেখান থেকে বিকেলে কর্মকর্তারা সড়ক পথে ঢাকায় ফেরেন। এর আগে ঢাকার গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশন থেকে ট্র্যাক কারটি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রওনা হয়।

এ সময় রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল হাসান, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম, কর্নেল মো. ফারুক হোসেনসহ দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা ঢাকা থেকে রেলপথে মাওয়া স্টেশনে আসেন।

ঢাকা-মাওয়া অংশে স্থাপিত রেল লাইনের বিভিন্ন পয়েন্টে ও স্টেশনের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো পর্যবেক্ষণ করেন চলতি পথে রেলট্র্যাক কারে থাকা পর্যবেক্ষক দল।

১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮১ কিলোমিটার রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করতে পরীক্ষামূলকভাবে এই কার্যক্রম চালানো হয়।

প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা-পদ্মা সেতু রেলপথে এখন চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। মাসখানেক পর ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবে। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল চালু হবে ২০২৪ সালে।

প্রকল্পের জুনিয়র স্ট্রাকচার প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস গণমাধ্যমকে জানান, আগামী মাসে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করতে পরীক্ষামূলক ট্র্যাককার চালানো হলো।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগকে দুই ভাগে ভাগ করে কাজ চলছে। একটি ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮১.৮৭৫ কিলোমিটার, অপরটি ভাঙ্গা জংশন থেকে যশোর পর্যন্ত ৭৯ কিলোমিটার।

এই দুই ভাগকে কাজের সুবিধার জন্য আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে– ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা ও ভাঙ্গা থেকে যশোর।

চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮০ শতাংশ। একইভাবে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের ৯৬ শতাংশ ও ভাঙ্গা-যশোর অংশের নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ। জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ শতাংশ।

আশার কথা পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ চালুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রেল ভ্রমণের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ