মহান শিক্ষাদিবস উপলক্ষে ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়ার ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত

৬১ তম মহান শিক্ষাদিবস উপলক্ষে ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের  ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১১ টায় ঐতিহাসিক সাতমাথায় ছাত্র সমাবেশের উদ্বোধন করেন ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ফিজু।
সমাবেশ শেষে বগুড়া জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা এবং এস.এস.সি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৩ এ উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
আলোচনা করেন সিপিবি বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, ছাত্র ইউনিয়ন দুপচাচিয়া উপজেলার সাবেক সভাপতি প্রফেসর আবুল বাশার, কৃষক সমিতি বগুড়ার সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির, খেলাঘর মহানগর উত্তরের সম্পাদক সোহেল আহমেদ খান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সাংগঠনিক সম্পাদক তামজীদ হায়দার চঞ্চল, বগুড়া জেলা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক জয় ভৌমিক প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন,” ১৯৬২ সালে জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে আইয়ূব সামরিক জান্তা সরকার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন থেকে পিছু হটে। মহান শিক্ষা আন্দোলনের ৬০ বছর পরেও এই দেশে অসাম্প্রদায়িক, গণমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক একই ধারার শিক্ষানীতি গড়ে উঠেনি। শরীফ কমিশন প্রণীত শিক্ষানীতি এবং স্বাধীনতার পরে দেশে প্রণীত সবকটি শিক্ষানীতির মূলচরিত্র এক ও অভিন্ন। জাতীয় বাজেটেও শিক্ষাখাতে প্রতিবছর বরাদ্দ কমছে। এ বছর শিক্ষাখাতে মোট জাতীয় বাজেটের ১১.৫৭% বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা গত ১৫ বছরের মধ্যে এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। সম্প্রতি “জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২০” প্রয়োগ শুরু হয়েছে যেখানে বিজ্ঞান শিক্ষাকে সংকুচিত করা হয়েছে। শিক্ষা উপকরণ সমূহের মূলা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কিছু কিছু উপকরণের মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বর্ধিত বেতন ফি। প্রতিবছর শিক্ষা কার্যক্রম থেকে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বিগত সাত বছরের কার্যক্রমে প্রায় ১৭ লাখ বা ৫৫% শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ঝরে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারের অনুগামী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকার আয়োজন চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, হল দখল, যৌন নিপীড়ন, গেস্টরুম নির্যাতন, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণসহ শিক্ষার উপর শাসকশ্রেণির সর্বগ্রাসী আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর চলছে রাষ্ট্রের চরম ফ্যাসিবাদী আক্রমণ। দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচারের মহোৎসব চলছে সমান তালে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নামিয়ে এনেছে। নতুন বোতলে পুরাতন মদের মতো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করার পাঁয়তারা চলছে। শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন আজ এক ও অভিন্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই ঐতিহাসিক দায় বরাবরের মতোই অধিকার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-সমাজের উপর বর্তেছে। এ লড়াইয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন অতীতের মতো বর্তমানেও সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিবে। সমাবেশ থেকে শিক্ষা দিবসের চেতনায় আগামীর লড়াইয়ে ছাত্র জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০