দিনাজপুরের বীরগঞ্জে টানা বর্ষণে শীতকালীন সবজির ক্ষতি

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ প্রচন্ড তাপদাহের পর কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের শীতকালীন সবজি চাষীরা।

আর্থিকভাবে মুনাফা লাভ ও স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় এই এলাকার অধিকাংশই কৃষক পতিত জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে থাকে। এরই ধারবাহিকতায় এবার ফুলকপি, পাতাকপি, সীম, মুলা, কাঁচামরিচ, টমেটো, বরবটি, বেগুন, পালংশাক, লালশাক, লাউ সবজি চাষ করেছে। সবজি ক্ষেতগুলি সবুজ শ্যামল ছায়ায় ঢেকে গেছে। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বর্ষনে তলিয়ে গেছে বেশির ভাগ সবজির ক্ষেত। এতে কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোট আবাদি জমির পরিমান ৩২হাজার ৮৯৬হেক্টর। এর মধ্যে ৯শত হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ করা হয়েছে। এবার খরিপ-২ মৌসুমে সবজি চাষের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে ৯৫২হেক্টর জমিতে এবং রবি মৌসুমে ২হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু কয়েক দিনের তাপদাহের পর গত বুধবার সন্ধ্যা হতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলায় ৪৮মিলি লিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৮৩মিলি লিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম।

এই অতি বৃষ্টির ফলে উপজেলার সবজিগ্রাম খ্যাত সাতোর ইউনিয়নের প্রাণনগরসহ মোহনপুর, শিবরামপুর, সুজালপুর, শতগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠে থাকা আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সবজি চাষিরা। সেই সাথে নেতিয়ে পড়েছে সবজি গাছের চারা এবং উঠতি ফসলের অনেক পানিতে পঁচতে শুরু করেছে এই বৃষ্টিতে।

এ ব্যাপারে উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাই ক্ষেত্র গ্রামের সবজি চাষি শাহজাহান সিরাজ বুলবুল জানান, আমি একটি বেসরকারি এনজিও হতে ঋণ নিয়ে দুই বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করেছি। প্রতিটি গাছ বেড়ে উঠেছিল সতেজ হয়ে কিন্তু বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে ফুলকপির গাছগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং নেতিয়ে পড়েছে মাটির সাথে।

একই কথা জানিয়ে সবজি চাষি মাসুদ আল কামাল বলেন, আমি শীতকালীন আগাম সবজি পাতাকপি, ফুলকপি চাষ করি। এতে কয়েক বছর ভালো টাকা লাভ করেছি। তবে এবার বৈরী আবহাওয়ার। কয়েকদিন প্রচন্ড তাপদাহের পর টানা বর্ষণ শুরু হয়েছে। এতে ফসলের যে ক্ষতি হলো আসল টাকা ঘর করতে পারো কি না জানি না।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবুল কাসেম জানান, উপজেলা বেশির ভাগ শীতের সবজি আবাদ হয় প্রাণনগর গ্রামে। এখানে মোট সবজি চাষের পরিমান ৭০হেক্টর জমিতে। আগাম সবজি চাষ একটু কঠিন কাজ। চারা রোপনের পর থেকে প্রতিনিয়ত জমিতে ক্ষেত পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হয়। তাপদাহের পর বর্তমানে টানা বৃষ্টির ফলে আগাম সবজি চাষে আশংকার সৃষ্টি হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে শিকড়ে পচন ধরে চারা মরে যেতে পারে। এতে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে আমাদের কৃষক।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০