‘শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে একজন দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা পেতাম’

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে আমরা হয়তো একজন মহানুভব, দূরদর্শী ও আদর্শ নেতা পেতাম বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৮ অক্টোবর) ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে মঙ্গলবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, শেখ রাসেল আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু আছে তার পবিত্র স্মৃতি। বাংলাদেশে সব শিশুর মধ্যে আজও আমি রাসেলকে খুঁজে ফিরি। এই শিশুদের রাসেলের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। এমন এক উজ্জ্বল শিশুর সত্তা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের শিশুরা বেড়ে উঠুক। খুনিদের বিরুদ্ধে তারা তীব্র ঘৃণা বর্ষণ করুক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে তারা এগিয়ে আসুক, এ প্রত্যাশাই করি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমি তাকে গভীর ভালোবাসা ও পরম মমতায় স্মরণ করি এবং তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

সরকারপ্রধান বলেন, শিশু রাসেলের জীবন সম্পর্কে শিশু-কিশোরদের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছর তার জন্মদিনকে ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে তৃতীয়বারের মতো ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ পালনের প্রতিপাদ্য ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

শেখ হাসিনা বলেন, শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসায় জন্মগ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত প্রিয় লেখক ছিলেন খ্যাতনামা দার্শনিক ও নোবেলজয়ী লেখক বার্ট্রান্ড রাসেল। বঙ্গবন্ধু বার্ট্রান্ড রাসেলের বই পড়ে বঙ্গমাতাকে ব্যাখ্যা করে শোনাতেন। তাই বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গমাতা দু’জনে মিলে শখ করে তাদের আদরের ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন রাসেল।

তিনি বলেন, রাসেল নামটি শুনলেই প্রথমে যে ছবিটি সামনে আসে তা হলো- হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণচঞ্চল এক ছোট্ট শিশুর দুরন্তপনা; যে শিশুর চোখগুলো হাসি-আনন্দে ভরপুর। মাথা ভর্তি অগোছালো চুলের সুন্দর একটি মুখাবয়ব- যে মুখাবয়ব ভালবাসা ও মায়ায় মাখা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশু রাসেলকে আমরা হারিয়েছি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের এক নির্মম, জঘন্য ও বিভীষিকাময় রাতে। স্বাধীনতা বিরোধী, ষড়যন্ত্রকারী ও বিশ্বাসঘাতকদের হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের ১৮ জন সদস্য শহীদ হন ঐ কালরাতে। সেদিন ছোট্ট শিশু রাসেলও খুনিদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।

তিনি বলেন, রাসেল তো বাঁচতে চেয়েছিল। বাঁচার জন্য ঘাতকদের কাছে আকুতি জানিয়েছিল। মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ঘাতকেরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিভীষিকাময় সেই রাতের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত এখনও গভীর শোকের সঙ্গে স্মরণ করি। এখনও ভাবি, কারও বিরুদ্ধে শত্রুতা থাকতেই পারে, কিন্তু সেই ক্ষোভ একজন কোমলমতি শিশুকে কেন কেড়ে নিবে? এই শিশু কী দোষ করেছিল? সে তো কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে কেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অংশ হবে? এতসব স্মৃতি স্মরণ করতে কষ্ট হয়। চোখ ভিজে ওঠে, বুকে পাথর বেঁধে সেইসব স্মৃতির সাগরে ডুব দেই। কারণ, সেদিন ঘাতকের বুলেট যে কোমলমতি শিশুটির প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, সে ছিল নির্দোষ, নিষ্পাপ ও অমায়িক ব্যবহারের অধিকারী।

এ সময় ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি।

সূত্র : বাসস

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ