বগুড়ায় আইএফআইসি ব্যাংক উপ-শাখায় ভল্ট ভেঙে ২৯ লাখ টাকা লুট

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-শাখায় ভল্ট ভেঙে ২৯ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গত বুধবার রাতে শহরের উপকন্ঠে মাটিডালি বিমান মোড়ের কাছে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে ব্যাংকের ওই উপ-শাখায় এ ঘটনা ঘটে। মাত্র ৩০ মিনিটেই টাকাগুলো লুট করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় ব্যাংকে কোন নিরাপত্তা প্রহরী ছিলনা।
আইএফআইসি ব্যাংকের বগুড়া শাখার ম্যানেজার তাজমিলুর রহমান জানান, গত বুধবার সারাদিন ব্যাংকের কার্যক্রম চলে। এরপর লেনদেনের ২৯ লাখ টাকা ব্যাংকের ভল্টে রেখে সন্ধ্যায় চলে যান কর্মরত ব্যাংকের ২জন কর্মকর্তা ও ২ জন কর্মচারী। এরপর আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকাল ৯ টার দিকে ব্যাংকে এসে কর্মকর্তারা ব্যাংকের কলাপসিবল গেইট ও ভল্ট ভাঙা অবস্থায় দেখতে পারেন। তারা দেখেন ভল্টে কোন টাকা নেই। পরে এ বিয়য়টি শাখা অফিস থেকে তাকে জানানো হয়। এরপর তিনি বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানান।

ব্যাংক ম্যানেজার আরও বলেন, ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গত বুধবার রাত ২ টা ২২ মিনিটে মুখে মাস্ক ও মাথায় পলিথিন বাঁধা দুই দৃর্বৃত্ত ব্যাংকের ওই উপ-শাখায় ঢুকে পড়ে। দুর্বত্তরা ব্যাংকের পিছন দিক দিয়ে ব্যাংকটি যে ভবনে অবস্থিত ওই ভবনে ওঠে এবং ব্যাংকের দোতলায় শাবল দিয়ে ব্যাংকের প্রধান দরজার লোহার কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। ভিতরে প্রবেশ করে তারা ক্যাশ টেবিলে কাঁচের উপর দিয়ে পার হয়ে ভল্টের ভিতরে যায়। সেখানে শাবল দিয়ে ভল্ট ভেঙ্গে ২৯ লাখ টাকা লুট করে রাত ২ টা ৫২ মিনিটের দিকে চলে যায়। ব্যাংকে দুর্বৃত্তরা ঢোকার পর সিসিটিভির ক্যামেরার মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। তিনি বলেন, টাকা লুটের সময় ব্যাংকে মোট ৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা সচল ছিল। এর মধ্যে ২টি ক্যামেরা ভল্টে সচল ছিল। দুর্বৃত্তরা মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই ব্যাংকে ঢুকে টাকা লুট করে সটকে পড়ে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ব্যাংকের ওই উপ-শাখায় রাতে কোন নিরাপত্তা প্রহরী কাজ করে না। যে কারনে সারারাত অরক্ষিত থাকে শাখাটি। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো: স্নিগ্ধ আখতার বলেন, ব্যাংকের এই উপ-শাখায় নিজস্ব নিরাপত্তার গাফলতি রয়েছে। রাতে এতগুলো টাকা রাখলেও কোন নিরাপত্তকা প্রহরী ছিলনা। তাছাড়া আইএফআইসি ব্যাংকের এলার্ম সিস্টেম রয়েছে। ব্যাংকের যে কোন শাখায় কোন অঘটন ঘটলে তা ব্যাংকের সেন্ট্রাল সিস্টেমে একটি মেসেজ যায়। কিন্ত তারা সেই মেসেজটা দিতে পারেনি। তিনি বলেন, এই চুরির ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে।

বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, বুধবার ব্যাংকের সিন্দুকে টাকা রেখে চলে যান কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার সকালে এসে দেখেও সিন্দুক ভেঙে টাকা নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে মাটিডালী এলাকায় দ্বিতীয় ভবনের ওপর তলায় এ শাখা থাকলেও রাতে কোনো নৈশপ্রহরী ছিল না। এ ছাড়া এ ভবনের ছাদে অনায়াসে যাতায়াত করা যায়। তিনি বলেন, বিষয়টি চুরির। ডাকাতির নয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে থানা পুলিশ ছাড়াও ডিবি, র‌্যাব, পিবিআই ও সিআইডি তদন্তে নেমেছে। আশা করা হচ্ছে খুব শিগগিরই এর কিনারা করা যাবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও গত ২৬ জানুয়ারি বগুড়া সদর উপজেলার পল্লীমঙ্গল হাটে এনআরবিসি ব্যাংকের উপ-শাখার ভল্ট ভেঙে ৯ লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০