বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে বারবার ১৪৪ ধার জারিকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করে অনির্দিষ্টকাল ইন্টারনেট সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত এক সপ্তাহের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল শুক্রবার ঐতিহাসিক এক রায়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্দেশ করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কাশ্মিরে বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞা সেখানকার বাসিন্দাদের বৈধ বাকস্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী।
কাশ্মিরে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট বন্ধ; এর আগে ভারতের কোনো অঞ্চলে এত দীর্ঘ সময় এ সেবা বন্ধ রাখা হয়নি। গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের ঘোষণার মধ্য দিয়ে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে পাস হয় একটি বিলও। আর গত ৯ আগস্ট রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আইনে পরিণত হয় তা। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মিরজুড়ে মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক অতিরিক্ত সেনা। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। অক্টোবরে ফোন ও মোবাইল সেবা চালু হলেও ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল আছে।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারকে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অংশ হিসেবে অভিহিত করেছে। রায়ে বিচারক এনভি রামানা বলেছেন, ‘অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই কেবল ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধের কথা বিবেচনা করা উচিত। করলেও তা হওয়া উচিত সাময়িক সময়ের জন্য’। আদালত জানায়, চলাচল, ইন্টারনেট মৌলিক স্বাধীনতা বাতিল করে ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না। বিচারপতি এনভি রমনা বলেন, সংবিধানের ১৯ ধারা অনুযায়ী বাকস্বাধীনতার অংশ ইন্টারনেটের অধিকার। কাশ্মির টাইমসের সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন ও কংগ্রেস এমপি গোলাম নবি আজাদ ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরে সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেছেন। তিন সদস্যের এ বেঞ্চে আরো ছিলেন বিচারক আর সুভাষ রেড্ডি ও বি আর গাভাই। রায়ে কাশ্মিরে আরোপিত অন্যান্য বিধিনিষেধও এক সপ্তাহের মধ্যে পর্যালোচনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কাশ্মিরে এর আগে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে
নভেম্বর পর্যন্ত ১৩৩ দিন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। পরের বছর ১৮ জুন থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৯৯ দিন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা দেশটির টেলিকম আইন পরিপন্থী বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার দেশটির সর্বোচ্চ এই আদালতের এক বেঞ্চ জানায়, কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা ছাড়া ইন্টারনেট বন্ধ রাখা টেলিকম আইনের লঙ্ঘন। এ ছাড়া ১৪৪ ধারা জারির পর সরকারের সব নির্দেশনার কাগজপত্রও আদালতে হাজির করতে বলা হয়েছে।