বগুড়া নিউজ ২৪ঃ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, ‘জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী কোনো দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকা অনুচিত। কারণ এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামায়াত স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায়নি।’ রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিজয় দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, `দেশের অনেক অগ্রগতি থাকলেও সত্য যে, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করতে পারিনি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করলেও এখনো পুরাপুরিভাবে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা অধিকারের কথা বলি কিন্তু স্বস্ব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি না।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘৫১ বছর আগে আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জিত হলেও বিজয়ের চেতনা এখনো পুরাপুরি সফল হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও জঙ্গিবাদের উত্থান আমাদের জাতীয় অগ্রগতির পথে আজ সবচেয়ে বড় বাধা।’
তিনি বলেন, ‘এক শ্রেণির ধর্ম ব্যবসায়ী, যারা ধার্মিক নয়, ধর্মেও মিথ্যাচার করে ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উস্কানি দিয়ে সমাজে বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে। তারা সমাজ ও দেশের শত্রু।’
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তিতে আজ আমাদের বলতে হয় যারা বাংলাদেশকে যারা তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিল, তাদেরকে তাক লাগিয়ে প্রিয় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ৫১ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩০ গুণ। বর্তমানে মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ৩ হাজার ডলার। স্বাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ শতাংশে। মঙ্গা শব্দটি এখন শুধুই অতীত। দানা খাদ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম, তৈরি পোশাকে দ্বিতীয়, ধান, মিঠাপানির মাছ ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, এসব অর্জন থেকে বলা যায় বিজয়ের চেতনা বৃথা যায়নি। তবে গত ৫১ বছরে দেশের অনেক অগ্রগতি হলেও এখনও বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি প্রতিরোধ করে সুশাসন ও সম্পদের সুষম বণ্টন করা।
বিজয়ের চেতনা বৃথা যায়নি শীর্ষক এই বারোয়ারী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়ার গৌরব অর্জন করে ঢাকা ক্যান্ট. গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শায়লা নুশমা,দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আবরার ফাইয়াজ এবং তৃতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা যৌথভাবে ভিকারুননিসানূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাদিয়াহ তাসনিম খান ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের এইচ এম নাঈম সানজিদ।
প্রতিযোগিতায় আরও অংশগ্রহণ করেন তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ইয়াকুব ইসলাম শাহেদ, শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের আশফাকুল ইসলাম ইফাদ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার মাহমুদুল হাসান মাহমুদ, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের সুমনা চাকমা ও আবদুলকাদির মোল্লা সিটি কলেজের জিন্নি উন হক জীবা।